ঢাকা 11:10 am, Wednesday, 18 June 2025

ভারতে নির্যাতনের ভিডিও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার

  • Reporter Name
  • Update Time : 07:07:16 pm, Thursday, 16 January 2025
  • 52 Time View

তথ্য যাচাইকারী সংস্থা রিউমার স্ক্যানার জানিয়েছে, ভারতে নির্যাতনের একটি পুরনো ভিডিওকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তথ্য যাচাইকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘ড. ইউনূসের ক্ষমতা দখলের পর বাংলাদেশ একটি ভয়ঙ্কর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তিনি ও তাঁর গুন্ডা বাহিনী জনগণকে নির্যাতন করছেন’- ক্যাপশনসহ একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এর কিছু ভারতীয় অ্যাকাউন্টে প্রচারিত হয়েছে।

এতে দাবি করা হচ্ছে যে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং তাঁর গুন্ডারা জনগণকে নির্যাতন করছে।

রিউমার স্ক্যানার দলের অনুসন্ধানে জানা গেছে, নির্যাতনের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, বরং এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি পুরনো ঘটনার ভিডিও।

এই বিষয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ নামে এক্স অ্যাকাউন্টে ৯ জুলাই, ২০২৪ তারিখের একটি পোস্টে আলোচিত ভিডিওর অনুরূপ একটি ভিডিও পাওয়া গেছে।

পোস্টের ক্যাপশনে দেখা যাচ্ছে, ভিডিওটি তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জয়ন্ত সিংয়ের কামারহাটির তালতলা ক্লাবে এক নারীকে নির্যাতনের দৃশ্যের।

উল্লেখ্য, কামারহাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একটি শহর।

পরে প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে, ২০২৪ সালের ৯ জুলাই ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত পশ্চিমবঙ্গে ‘টিএমসি বিধায়কের ‘সহযোগী’র এক নারীকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল’- শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিগুলোর সঙ্গে প্রচারিত ওই ভিডিওটির ছবি মিলে যায়।

প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় একদল লোক এক মেয়েকে লাঞ্ছিত করার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

ব্যারাকপুর পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজ থেকে শনাক্ত হওয়া দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় দুই বছরের পুরনো বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রশ্নবিদ্ধ ভিডিওটি ২০২৪ সালের ৯ জুলাইয়ে আরেকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮-তে প্রকাশিত ‘বাংলায় আরেকটি বেত্রাঘাতের ভিডিও নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধ: টিএমসি নেতার ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের’- শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন ব্যবহৃত ছবির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

এ ছাড়াও প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে যে, এটি পশ্চিমবঙ্গের কামারহাটির একটি ঘটনা।

ওপরের বিষয়াদি পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট হয় যে, বিতর্কিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে যে ঘটনাটি প্রচারিত হচ্ছে, তা বাংলাদেশের নয়। বরং তা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি ঘটনা।

এটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনা নয়। ভিডিওটি ৯ জুলাই, ২০২৪ তারিখে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল।

গণমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ভিডিওটি প্রায় দুই বছর আগে রেকর্ড করা হয়েছিল।

অতএব, ভারতের একটি পুরনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে, যাতে দাবি করা হয় যে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সময় এ নির্যাতন হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পাঠক প্রিয়

রাজশাহীতে করোনা পরীক্ষার একমাত্র ভরসা রামেক-এর পিসিআর ল্যাব

ভারতে নির্যাতনের ভিডিও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার

Update Time : 07:07:16 pm, Thursday, 16 January 2025

তথ্য যাচাইকারী সংস্থা রিউমার স্ক্যানার জানিয়েছে, ভারতে নির্যাতনের একটি পুরনো ভিডিওকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তথ্য যাচাইকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘ড. ইউনূসের ক্ষমতা দখলের পর বাংলাদেশ একটি ভয়ঙ্কর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তিনি ও তাঁর গুন্ডা বাহিনী জনগণকে নির্যাতন করছেন’- ক্যাপশনসহ একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এর কিছু ভারতীয় অ্যাকাউন্টে প্রচারিত হয়েছে।

এতে দাবি করা হচ্ছে যে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং তাঁর গুন্ডারা জনগণকে নির্যাতন করছে।

রিউমার স্ক্যানার দলের অনুসন্ধানে জানা গেছে, নির্যাতনের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, বরং এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি পুরনো ঘটনার ভিডিও।

এই বিষয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ নামে এক্স অ্যাকাউন্টে ৯ জুলাই, ২০২৪ তারিখের একটি পোস্টে আলোচিত ভিডিওর অনুরূপ একটি ভিডিও পাওয়া গেছে।

পোস্টের ক্যাপশনে দেখা যাচ্ছে, ভিডিওটি তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জয়ন্ত সিংয়ের কামারহাটির তালতলা ক্লাবে এক নারীকে নির্যাতনের দৃশ্যের।

উল্লেখ্য, কামারহাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একটি শহর।

পরে প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড অনুসন্ধানের মাধ্যমে, ২০২৪ সালের ৯ জুলাই ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত পশ্চিমবঙ্গে ‘টিএমসি বিধায়কের ‘সহযোগী’র এক নারীকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল’- শিরোনামে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিগুলোর সঙ্গে প্রচারিত ওই ভিডিওটির ছবি মিলে যায়।

প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে যে, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় একদল লোক এক মেয়েকে লাঞ্ছিত করার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

ব্যারাকপুর পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজ থেকে শনাক্ত হওয়া দুই সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রচারিত ভিডিওটি প্রায় দুই বছরের পুরনো বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রশ্নবিদ্ধ ভিডিওটি ২০২৪ সালের ৯ জুলাইয়ে আরেকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮-তে প্রকাশিত ‘বাংলায় আরেকটি বেত্রাঘাতের ভিডিও নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধ: টিএমসি নেতার ঘনিষ্ঠ সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের’- শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন ব্যবহৃত ছবির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

এ ছাড়াও প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে যে, এটি পশ্চিমবঙ্গের কামারহাটির একটি ঘটনা।

ওপরের বিষয়াদি পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট হয় যে, বিতর্কিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওতে যে ঘটনাটি প্রচারিত হচ্ছে, তা বাংলাদেশের নয়। বরং তা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি ঘটনা।

এটি সাম্প্রতিক কোনো ঘটনা নয়। ভিডিওটি ৯ জুলাই, ২০২৪ তারিখে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল।

গণমাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ভিডিওটি প্রায় দুই বছর আগে রেকর্ড করা হয়েছিল।

অতএব, ভারতের একটি পুরনো ভিডিও প্রচার করা হয়েছে, যাতে দাবি করা হয় যে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সময় এ নির্যাতন হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।