ঢাকা 8:37 pm, Tuesday, 17 June 2025

রাজশাহীতে করোনা পরীক্ষার একমাত্র ভরসা রামেক-এর পিসিআর ল্যাব

  • Reporter Name
  • Update Time : 03:39:34 pm, Tuesday, 17 June 2025
  • 0 Time View

রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলার মানুষের করোনা টেস্টের জন্য একমাত্র ভরসা এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব।

বিভাগের ৬টি ল্যাবের মধ্যে এই একটি মাত্র পিসিআর ল্যাব বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য বিভাগে ৬টি সরকারি আরটি পিসিআর ল্যাব বসানো হয়েছিল। পরে করোনার প্রভাব কমে যাওয়ায় বন্ধ ছিল বেশির ভাগ ল্যাব। ল্যাবগুলোতে রাখা ছিল না পর্যাপ্ত কিটও।

এখন নতুন করে করোনা শনাক্ত বেড়ে যাওয়ায়, এসব ল্যাব চালু করতে গিয়ে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগকে। ছয়টি ল্যাবের মধ্যে দুটির মেশিন নষ্ট। কিট সংকটে শুধু রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের আরটি পিসিআর ল্যাবটিই বর্তমানে সচল রয়েছে। এ কারণে রাজশাহী বিভাগের করোনা শনাক্তে রামেক-এর ল্যাবই এখন ভরসা।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগে করোনা শনাক্তের জন্য সরকারিভাবে ৬টি পিসিআর ল্যাব বসানো হয়েছিল। এগুলো হলো- রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পাবনা হাসপাতাল, শহীদ মুনসুর আলী হাসপাতাল সিরাজগঞ্জ, শহীদ জিয়াউর রহমান হাসপাতাল বগুড়া ও নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এর মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নওগাঁ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বাকিগুলো কিট সংকটে সচল করা যাচ্ছে না।

এদিকে বেসরকারিভাবে বগুড়ার টিএমএসএস হাসপাতাল ও সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী হাসপাতাল ল্যাব চালু করলেও, তারা এখন সেটি বন্ধ রেখেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনাকালে চরম সংকট দেখা দেওয়ায়, বিশ্বব্যাংকের দেওয়া ঋণে ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ (ইআরপিপি)-এর আওতায় ৯৪টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)’র শয্যার বরাদ্দ পায় রাজশাহী বিভাগ। তবে আইসিইউ চালাতে লোকবল সংকটে রাজশাহী ও বগুড়া ছাড়া বাকি জেলাগুলোর হাসপাতালগুলোতে ৪৪টি শয্যা অলস পড়ে আছে। এতে রোগীদের অতিরিক্ত চাপে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে এই দুই জেলার হাসপাতাল দুটি। পাশাপাশি সংকটাপন্ন রোগীও সিরিয়াল না পেয়ে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে আরো জানা যায়, ইআরপিপি প্রজেক্টের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের জন্য বরাদ্দ হওয়া ৯৪টি আইসিইউ-এর মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ৪০টি, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ১০টি, সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ১০টি, জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ১০টি, বগুড়ার সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আটটি ও সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ছয়টি দেওয়া হয়। তবে রামেক ও শজিমেক হাসপাতাল ছাড়া বাকিগুলোতে ফেলে রাখা হয়েছে আইসিইউ শয্যা। ফলে উত্তরাঞ্চলের এই জেলাগুলোর গুরুতর রোগীদের চাপ পড়ছে এই দুই হাসপাতালে।

রাজশাহী বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান বাসস’কে বলেন, করোনা কমে যাওয়ায় অনেক দিন ল্যাব বন্ধ ছিল। করোনা আবারও বেড়ে যাওয়ায় ল্যাবগুলো সচল করা হচ্ছে। এর মধ্যে দু-একটি ল্যাব পড়ে থাকার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো সচলের জন্য আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। পাশাপাশি পর্যাপ্ত কিটের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো এলে ল্যাবগুলো আবার চালু করবো। আশা করা যায় শীঘ্রই সেই ল্যাবগুলোতে করোনা টেস্ট করা সম্ভব হবে।
তথ্যসূত্র:বাসস

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পাঠক প্রিয়

রাজশাহীতে করোনা পরীক্ষার একমাত্র ভরসা রামেক-এর পিসিআর ল্যাব

রাজশাহীতে করোনা পরীক্ষার একমাত্র ভরসা রামেক-এর পিসিআর ল্যাব

Update Time : 03:39:34 pm, Tuesday, 17 June 2025

রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলার মানুষের করোনা টেস্টের জন্য একমাত্র ভরসা এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব।

বিভাগের ৬টি ল্যাবের মধ্যে এই একটি মাত্র পিসিআর ল্যাব বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য বিভাগে ৬টি সরকারি আরটি পিসিআর ল্যাব বসানো হয়েছিল। পরে করোনার প্রভাব কমে যাওয়ায় বন্ধ ছিল বেশির ভাগ ল্যাব। ল্যাবগুলোতে রাখা ছিল না পর্যাপ্ত কিটও।

এখন নতুন করে করোনা শনাক্ত বেড়ে যাওয়ায়, এসব ল্যাব চালু করতে গিয়ে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগকে। ছয়টি ল্যাবের মধ্যে দুটির মেশিন নষ্ট। কিট সংকটে শুধু রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের আরটি পিসিআর ল্যাবটিই বর্তমানে সচল রয়েছে। এ কারণে রাজশাহী বিভাগের করোনা শনাক্তে রামেক-এর ল্যাবই এখন ভরসা।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগে করোনা শনাক্তের জন্য সরকারিভাবে ৬টি পিসিআর ল্যাব বসানো হয়েছিল। এগুলো হলো- রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পাবনা হাসপাতাল, শহীদ মুনসুর আলী হাসপাতাল সিরাজগঞ্জ, শহীদ জিয়াউর রহমান হাসপাতাল বগুড়া ও নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এর মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নওগাঁ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বাকিগুলো কিট সংকটে সচল করা যাচ্ছে না।

এদিকে বেসরকারিভাবে বগুড়ার টিএমএসএস হাসপাতাল ও সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী হাসপাতাল ল্যাব চালু করলেও, তারা এখন সেটি বন্ধ রেখেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনাকালে চরম সংকট দেখা দেওয়ায়, বিশ্বব্যাংকের দেওয়া ঋণে ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ (ইআরপিপি)-এর আওতায় ৯৪টি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)’র শয্যার বরাদ্দ পায় রাজশাহী বিভাগ। তবে আইসিইউ চালাতে লোকবল সংকটে রাজশাহী ও বগুড়া ছাড়া বাকি জেলাগুলোর হাসপাতালগুলোতে ৪৪টি শয্যা অলস পড়ে আছে। এতে রোগীদের অতিরিক্ত চাপে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে এই দুই জেলার হাসপাতাল দুটি। পাশাপাশি সংকটাপন্ন রোগীও সিরিয়াল না পেয়ে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে আরো জানা যায়, ইআরপিপি প্রজেক্টের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের জন্য বরাদ্দ হওয়া ৯৪টি আইসিইউ-এর মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ৪০টি, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ১০টি, সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ১০টি, জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ১০টি, বগুড়ার সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আটটি ও সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ছয়টি দেওয়া হয়। তবে রামেক ও শজিমেক হাসপাতাল ছাড়া বাকিগুলোতে ফেলে রাখা হয়েছে আইসিইউ শয্যা। ফলে উত্তরাঞ্চলের এই জেলাগুলোর গুরুতর রোগীদের চাপ পড়ছে এই দুই হাসপাতালে।

রাজশাহী বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান বাসস’কে বলেন, করোনা কমে যাওয়ায় অনেক দিন ল্যাব বন্ধ ছিল। করোনা আবারও বেড়ে যাওয়ায় ল্যাবগুলো সচল করা হচ্ছে। এর মধ্যে দু-একটি ল্যাব পড়ে থাকার কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলো সচলের জন্য আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। পাশাপাশি পর্যাপ্ত কিটের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো এলে ল্যাবগুলো আবার চালু করবো। আশা করা যায় শীঘ্রই সেই ল্যাবগুলোতে করোনা টেস্ট করা সম্ভব হবে।
তথ্যসূত্র:বাসস