ঢাকা 3:51 am, Wednesday, 18 June 2025

লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানলে ৫ জনের প্রাণহানি

  • Reporter Name
  • Update Time : 03:07:00 pm, Thursday, 9 January 2025
  • 58 Time View

ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলে অন্তত ৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আরো প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহত বেশ কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কর্মকর্তারা বুধবার এই খবর জানিয়েছে। দমকল কর্মীরা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাঞ্চলের আলটাডেনার শহরতলীর ১০ হাজার ৬শ’ একর এলাকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস অ্যাঞ্জেলসের প্রায় ১৫শ’ ভবন আগুনে পুড়ে গেছে এবং প্রায় ১ লক্ষ লোক বাড়ি ঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

লস অ্যাঞ্জেলসের শেরিফ রবার্ট লুনা বলেছেন, এই পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আরো প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

লস অ্যাঞ্জেলস ফায়ার সার্ভিস বিভাগের প্রধান অ্যান্থনি ম্যারোনি জানিয়েছেন, পালিসেডস ও ইটঁন এলাকায় দু’টি দাবানলে ৭ হাজারের বেশি এলাকা পুড়ে গেছে। পালিসেডসের আগুনে বিপুল সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছে।

এএফপি’র এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে।

আবহাওয়াবিদ ডেনিয়েল সোয়াইন জানিয়েছেন,প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

ম্যারোনি বলেছেন, ২৪ ঘন্টা পার হলেও দাবানল নিয়ন্ত্রনে আসেনি বরং আরো অবনতি হয়েছে। এরইমধ্যে এক হাজারেরও বেশি বাড়ি ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে লোকজন বাড়ি গাড়ি ফেলেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা এই পরিস্থিতিকে হলিউডের সিনেমার দৃশ্যের সাথে তুলনা করছেন।

আগুন নেভাতে ১ হাজার ৪শ’ দমকলকর্মী কাজ করছে। অত্যাধুনিক সরঞ্জাম দিয়েও আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

প্যাসিফিক পলিসেডস এলাকায় জেনিফার অ্যানিস্টোন, ব্রাডলি কুপার, টম হ্যাঙ্কস, রিজ উইদারস্পুন, অ্যাডাম স্যান্ডেলার, মাইকেল কিটনসহ অনেক হলিউড তারকার বাড়ি রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার ছড়িয়ে পড়া দাবানলে মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে ২ হাজার ৯শ’ একরেরও বেশি এলাকা পুড়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ রাজ্যজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয় এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে তা চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে অসংখ্য বাড়ি ঘর পুড়ে যায় এবং তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

কর্তৃপক্ষ ৩০ হাজার মানুষকে অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। হুমকিতে রয়েছে ১৩ হাজার ভবন।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সান্তা মনিকা এবং মালাবু উপকূলীয় শহরগুলোর মধ্যে প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় কমপক্ষে ২ হাজার ৯শ’ ২১ একর পুড়ে গেছে। ইতোমধ্যে আগুনের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঐ এলাকার বাসিন্দা মার্টিন স্যানসিং বলেছেন, গত ২০ বছরের মধ্যে দাবানলের এই রকম ভয়াবহতা আর কখনো দেখিনি।

কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে, দাবানল ছড়িয়ে পড়া এলাকাগুলোতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে এবং চারপাশ আগুনের কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে।

ছবিতে আরো দেখা গেছে, অগ্নি নির্বাপক কর্মীরা বিশেষ ব্যবস্থায় সমুদ্র থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। আগুনের শিখা বাড়ি ঘরকে ক্রমাগত গ্রাস করছে এবং বুলডোজারগুলো রাস্তা থেকে পরিত্যক্ত যানবাহনগুলোকে সরিয়ে নিচ্ছে।

এদিকে লস অ্যাঞ্জেলসের ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট ছুটিতে থাকা অগ্নি নির্বাপক কর্মীদের ছুটি বাতিল করে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

দাবানল ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ১৫ লাখ লোক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পাঠক প্রিয়

রাজশাহীতে করোনা পরীক্ষার একমাত্র ভরসা রামেক-এর পিসিআর ল্যাব

লস অ্যাঞ্জেলসে দাবানলে ৫ জনের প্রাণহানি

Update Time : 03:07:00 pm, Thursday, 9 January 2025

ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলে অন্তত ৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আরো প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। আহত বেশ কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কর্মকর্তারা বুধবার এই খবর জানিয়েছে। দমকল কর্মীরা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাঞ্চলের আলটাডেনার শহরতলীর ১০ হাজার ৬শ’ একর এলাকা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস অ্যাঞ্জেলসের প্রায় ১৫শ’ ভবন আগুনে পুড়ে গেছে এবং প্রায় ১ লক্ষ লোক বাড়ি ঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

লস অ্যাঞ্জেলসের শেরিফ রবার্ট লুনা বলেছেন, এই পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আরো প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

লস অ্যাঞ্জেলস ফায়ার সার্ভিস বিভাগের প্রধান অ্যান্থনি ম্যারোনি জানিয়েছেন, পালিসেডস ও ইটঁন এলাকায় দু’টি দাবানলে ৭ হাজারের বেশি এলাকা পুড়ে গেছে। পালিসেডসের আগুনে বিপুল সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছে।

এএফপি’র এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে।

আবহাওয়াবিদ ডেনিয়েল সোয়াইন জানিয়েছেন,প্রবল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

ম্যারোনি বলেছেন, ২৪ ঘন্টা পার হলেও দাবানল নিয়ন্ত্রনে আসেনি বরং আরো অবনতি হয়েছে। এরইমধ্যে এক হাজারেরও বেশি বাড়ি ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে লোকজন বাড়ি গাড়ি ফেলেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা এই পরিস্থিতিকে হলিউডের সিনেমার দৃশ্যের সাথে তুলনা করছেন।

আগুন নেভাতে ১ হাজার ৪শ’ দমকলকর্মী কাজ করছে। অত্যাধুনিক সরঞ্জাম দিয়েও আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

প্যাসিফিক পলিসেডস এলাকায় জেনিফার অ্যানিস্টোন, ব্রাডলি কুপার, টম হ্যাঙ্কস, রিজ উইদারস্পুন, অ্যাডাম স্যান্ডেলার, মাইকেল কিটনসহ অনেক হলিউড তারকার বাড়ি রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার ছড়িয়ে পড়া দাবানলে মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে ২ হাজার ৯শ’ একরেরও বেশি এলাকা পুড়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ রাজ্যজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয় এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে তা চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে অসংখ্য বাড়ি ঘর পুড়ে যায় এবং তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

কর্তৃপক্ষ ৩০ হাজার মানুষকে অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। হুমকিতে রয়েছে ১৩ হাজার ভবন।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সান্তা মনিকা এবং মালাবু উপকূলীয় শহরগুলোর মধ্যে প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় কমপক্ষে ২ হাজার ৯শ’ ২১ একর পুড়ে গেছে। ইতোমধ্যে আগুনের সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঐ এলাকার বাসিন্দা মার্টিন স্যানসিং বলেছেন, গত ২০ বছরের মধ্যে দাবানলের এই রকম ভয়াবহতা আর কখনো দেখিনি।

কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে, দাবানল ছড়িয়ে পড়া এলাকাগুলোতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে এবং চারপাশ আগুনের কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে।

ছবিতে আরো দেখা গেছে, অগ্নি নির্বাপক কর্মীরা বিশেষ ব্যবস্থায় সমুদ্র থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন। আগুনের শিখা বাড়ি ঘরকে ক্রমাগত গ্রাস করছে এবং বুলডোজারগুলো রাস্তা থেকে পরিত্যক্ত যানবাহনগুলোকে সরিয়ে নিচ্ছে।

এদিকে লস অ্যাঞ্জেলসের ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট ছুটিতে থাকা অগ্নি নির্বাপক কর্মীদের ছুটি বাতিল করে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

দাবানল ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ১৫ লাখ লোক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।