হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি : নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুমদ্বীপ এলাকায় জমি বন্দোবস্ত পেয়ে দীর্ঘদিন ধরে জমিতে ঘর নির্মান করে বসবাস করে আসছেন একটি পরিবার। ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে জোরপূর্বক সে ঘরের লোকজনকে মারধর করে বিতাড়িত করে তালা ঝুলিয়ে দখলের অভিযোগ উঠেছে রাসেল নামে এক স্থানীয় ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে। পরে এলাকার কয়েকজনের সহযোগিতায় সেই তালা ভেঙে ভুক্তভোগী পরিবারকে ঘরে বসবাস করার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত রাসেল নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ জাফরের ছেলে। সে স্থানীয় ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা। স্থানীয়রা জানান, রাসেল ৫ আগস্টের পর নিজেকে কখনো সম্বয়ক কখনো ছাত্রদল নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সন্ধ্যায়।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিকেলে ভুক্তভোগী নবীর উদ্দিন হাতিয়া থানা একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, নিঝুমদ্বীপের সি-বীচ এলাকায় ৭ পরিবারের মত নবীর উদ্দিনও বসবাস করতেন। কিন্তু পর্যটন কর্পোরেশন পর্যটনের স্থাপনা গড়ার লক্ষ্যে সেই জায়গাটি আয়ত্বে নিয়ে নেয়। বসবাসরত পরিবারগুলোকে ২০২০-২১ সালে দ্বীপের অন্যপাশে সমপরিমান জায়গ সরকারি বিধি মোতাবেক বন্দোবস্ত করে দেয়। নবীর উদ্দিন সেখানে ঘরবাড়ী তৈরী করে বসবাস করতে থাকেন। মাঝে মাঝে ছাত্রদল নেতা রাসেল এ জায়গা তাদের দাবি করে নবীর উদ্দিনকে উৎখাতের জন্য নানা ভয় ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে আসছে।
নবীর উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ীর ৪৮ শতাংশ জমি তাদের বলে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় ২১ মে বুধবার সন্ধ্যায় রাসেল সহ ১০-১২ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে আমার বসতঘরে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও কোপাইয়া কাটিয়া তছনছ করে। বাড়ীর গাছ কেটে নেয়। আমার স্ত্রী ও ছেলে বাধা দিতে গেলে তাদেরকে মারপিট করে আহত করে। তারা ঘরে থাকা দুইটি স্মার্ট মোবাইল ফোন ও ১ টি বাটন ফোন সেট লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় তারা আমাদেরকে ঘর থেকে জোরপূর্বক বাহির করে তাল মেরে দেয়। এমনকি ঘরে ঢুকলে হাত পা ভেঙে দেওয়া সহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন এসে সেই তালা ভেঙে আমাদেরকে ঘরে যেতে দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেকে জানান, রাসেলরা কয়েকজন এসে নবীর উদ্দিনের ঘরে তালা লাগিয়ে দেয়। তারা চলে যাওয়ার পর আশপাশের লোকজন তালা ভেঙে নবীর উদ্দিনের পরিবারকে ঘরে তুলে দেয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা রাসেল বলেন, আমি জুলাই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলাম কিন্ত কখনো সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে এলাকায় কোন প্রভাব বিস্তার করিনি। আমি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একজন কর্মী। এ জায়গার বিষয়ে আমরা কোর্টে একটি মামলা করেছি। সে মামলা কোর্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তারা নিষেধাজ্ঞা জমিটিতে বেড়া দিতেছিল। আমার ভাইয়েরা সেখানে গিয়ে বেড়া দিতে বাধা দিয়েছিল। এছাড়া তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি।
উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব রিয়াজ মাহমুদ বলেন,দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ কোনো প্রকার অপরাধ করার সুযোগ পাবেনা। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। দোষী হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে হাতিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ একেএম আজমল হুদা বলেন, বন্দোবস্তপ্রাপ্ত জমির মালিক নবীর উদ্দিন একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগটি তদন্তের জন্য নিঝুমদ্বীপ পুলিশ ফাঁড়ির এস আই আব্দুল মান্নানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত স্বাপেক্ষে পরবর্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।