ঢাকা 4:02 am, Tuesday, 17 June 2025

হাতিয়ায় ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গভীর সমুদ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত জেলেরা

  • Reporter Name
  • Update Time : 11:14:13 pm, Wednesday, 11 June 2025
  • 3 Time View

হাতিয়া ( নোয়াখালী) প্রতিনিধি : হাতিয়ার জেলেরা প্রস্তুত সাগরে যাওয়ার জন্য। ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বুধবার (১১ জুন) মধ্যরাত থেকে বঙ্গোপসাগরে আবারও মাছ ধরা শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার মৎস্যঘাট গুলোতে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্যকর অবস্থায়। হাতিয়ার ২০ টি ঘাটে প্রায় লক্ষাধিক জেলে রয়েছে। এসব ঘাটের জেলেরা জাল গুছিয়ে, ট্রলারে বরফ, খাবার, জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় মালামাল তুলে গভীর সমুদ্রে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ কেউ আগেভাগেই সাগরে রওনা হয়েছেন। দীর্ঘ সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া প্রায় লক্ষাধিক জেলে ও ট্রলার শ্রমিকদের মাঝে এখন স্বস্তি ও উৎসাহ বিরাজ করছে।
হাতিয়ার বয়ারচর চেয়ারম্যান ঘাটের শাহেদ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন বসে ছিলাম। কোনো আয়-রোজগার ছিল না। ধার-দেনা করে চলেছি। এখন সাগরে গিয়ে ভালো মাছ পেলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।
সূর্য়মুখী ঘাটের জেলে আরিফ বলেন, সরকারি প্রণোদনার তালিকায় প্রকৃত অনেক জেলের নাম নেই। যারা অন্য পেশায় জড়িত দেখেছি তারা সরকারি চাল পেয়েছে। তাই প্রণোদনার তালিকায় প্রকৃত জেলেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি। একই ঘাটের
অপর জেলে আবুল বাসার বলেন আজকে রাতেই আমরা গভীর সাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবো। তাই ট্রলারে জাল ও বরফসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম তুলছি। গতকাল আমাদের ট্রলারের রং করার কাজ শেষ হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো: ফাহাদ হাসান বলেন,এই নিষেধাজ্ঞার ফলে মাছের প্রজনন বেড়েছে এবং ইলিশের ঘনত্ব বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। আমরা নিয়মিত নজরদারির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছি যেন কেউ নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ না করে।
নিরাপত্তার বিষয়ে কোস্ট গার্ড, নৌ-পুলিশ ও মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উপকূলের মানুষের কাছে ইলিশ মৌসুম শুধু মাছ ধরার সময় নয়, এটি জীবিকার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাই দীর্ঘ অপেক্ষার পর সাগরে নামার সুযোগ পেয়ে জেলেদের মনে এখন একটাই আশা ভরা মৌসুমে ফিরবে রুপালি স্বপ্ন, ঘুরে দাঁড়াবে উপকূলের অর্থনীতি।
উল্লেখ্য, সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও মজুদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ইতি পূর্বে প্রতিবছর ২০ এপ্রিল থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের জন্য মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করত। তবে এবার জেলেদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞার সময় এগিয়ে এনে ১৪ এপ্রিল থেকে ১১ জুন ৫৮ দিনের জন্য তা কার্যকর করা হয়। এ সময়ে ইলিশসহ সব ধরনের সামুদ্রিক মাছ ধরা এবং গভীর সমুদ্রে ট্রলার চলাচল নিষিদ্ধ ছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পাঠক প্রিয়

হাতিয়ায় ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গভীর সমুদ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত জেলেরা

Update Time : 11:14:13 pm, Wednesday, 11 June 2025

হাতিয়া ( নোয়াখালী) প্রতিনিধি : হাতিয়ার জেলেরা প্রস্তুত সাগরে যাওয়ার জন্য। ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বুধবার (১১ জুন) মধ্যরাত থেকে বঙ্গোপসাগরে আবারও মাছ ধরা শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার মৎস্যঘাট গুলোতে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্যকর অবস্থায়। হাতিয়ার ২০ টি ঘাটে প্রায় লক্ষাধিক জেলে রয়েছে। এসব ঘাটের জেলেরা জাল গুছিয়ে, ট্রলারে বরফ, খাবার, জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় মালামাল তুলে গভীর সমুদ্রে যাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ কেউ আগেভাগেই সাগরে রওনা হয়েছেন। দীর্ঘ সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া প্রায় লক্ষাধিক জেলে ও ট্রলার শ্রমিকদের মাঝে এখন স্বস্তি ও উৎসাহ বিরাজ করছে।
হাতিয়ার বয়ারচর চেয়ারম্যান ঘাটের শাহেদ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন বসে ছিলাম। কোনো আয়-রোজগার ছিল না। ধার-দেনা করে চলেছি। এখন সাগরে গিয়ে ভালো মাছ পেলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।
সূর্য়মুখী ঘাটের জেলে আরিফ বলেন, সরকারি প্রণোদনার তালিকায় প্রকৃত অনেক জেলের নাম নেই। যারা অন্য পেশায় জড়িত দেখেছি তারা সরকারি চাল পেয়েছে। তাই প্রণোদনার তালিকায় প্রকৃত জেলেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি। একই ঘাটের
অপর জেলে আবুল বাসার বলেন আজকে রাতেই আমরা গভীর সাগরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবো। তাই ট্রলারে জাল ও বরফসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জাম তুলছি। গতকাল আমাদের ট্রলারের রং করার কাজ শেষ হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো: ফাহাদ হাসান বলেন,এই নিষেধাজ্ঞার ফলে মাছের প্রজনন বেড়েছে এবং ইলিশের ঘনত্ব বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। আমরা নিয়মিত নজরদারির মাধ্যমে নিশ্চিত করেছি যেন কেউ নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ না করে।
নিরাপত্তার বিষয়ে কোস্ট গার্ড, নৌ-পুলিশ ও মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উপকূলের মানুষের কাছে ইলিশ মৌসুম শুধু মাছ ধরার সময় নয়, এটি জীবিকার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাই দীর্ঘ অপেক্ষার পর সাগরে নামার সুযোগ পেয়ে জেলেদের মনে এখন একটাই আশা ভরা মৌসুমে ফিরবে রুপালি স্বপ্ন, ঘুরে দাঁড়াবে উপকূলের অর্থনীতি।
উল্লেখ্য, সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও মজুদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার ইতি পূর্বে প্রতিবছর ২০ এপ্রিল থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের জন্য মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করত। তবে এবার জেলেদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞার সময় এগিয়ে এনে ১৪ এপ্রিল থেকে ১১ জুন ৫৮ দিনের জন্য তা কার্যকর করা হয়। এ সময়ে ইলিশসহ সব ধরনের সামুদ্রিক মাছ ধরা এবং গভীর সমুদ্রে ট্রলার চলাচল নিষিদ্ধ ছিল।