ঢাকা 3:32 am, Tuesday, 17 June 2025

কুয়েটে শিক্ষার্থীদের অনশন অব্যাহত, ক্যাম্পাসে আবার বিক্ষোভ

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:39:27 pm, Wednesday, 23 April 2025
  • 14 Time View

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের তদন্ত কমিটির ওপর আস্থা রেখে অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসার অনুরোধ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। তবে উপাচার্যের পদত্যাগ ছাড়া আমরণ অনশন কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা সরে আসবেন না বলে জানিয়েছেন।

আজ বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে শিক্ষা উপদেষ্টা কুয়েট ক্যাম্পাসে আসেন। তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি তাঁদের দাবি শোনেন ও অনশন ভাঙতে অনুরোধ করেন।

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সি আর আবরার। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। গতকাল অনশনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে এই গরমের মধ্যে। আমি তাদের জন্য ভীষণভাবে শঙ্কিত। গতকাল আমরা তিনজনের একটা কমিটি করেছি। তাঁরা এসে সার্বিক পর্যবেক্ষণ করে আমাদের একটা সুপারিশ দেবেন। এরপর আমরা পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করব। তাঁরা চাইছেন, আমরা এখনই কোনো ঘোষণা দিই, যার মাধ্যমে তাঁরা অনশন শেষ করতে পারেন। আমি তাঁদের বোঝাতে চেষ্টা করছি যে আইনি বিষয়ে আছে। আমরা যা–ই করি না কেন, সেটা আইন দ্বারা নির্দিষ্ট হতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার নির্দিষ্ট আইন আছে। সেই আইনের মধ্য থেকেই আমাদের কমিটি সুপারিশ করবে বলে আশা করছি। সুপারিশ আমাদের হাতে এলে আমরা চেষ্টা করব যত দ্রুত সেটা কার্যকর করা যায়।’

সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙার পর যে পরিণাম হয়েছিল, সেই উদাহরণ তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে সি আর আবরার বলেন, ‘তাঁরা কেউ কেউ বলেছেন এবং সংগত কারণেই বলেছেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় যখন শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙা হলো, তখন পরবর্তীকালে তো তাঁদের কিছু করা হলো না। আমি বলেছি, উনি (অধ্যাপক জাফর ইকবাল) যেটা করেছিলেন, কেন করেছেন জানি না। সেখানে একজন বুদ্ধিজীবী হিসেবে যার ওপর অনেকে আস্থা রেখেছিলেন, হয়তো তিনি কথা রাখবেন, সেটা তিনি করেননি। সেটা তাঁর বিষয়। এটা নিয়ে আমার আসলে কিছু বলার নেই। এখানে আমি নিজে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে তোমাদের কাছে এসেছি। আমি তোমাদের বলতে পারি, কমিটির যে সুপারিশ আসবে, সেটা আমরা বিবেচনা করে যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটা অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করব।’

এ বিষয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের কয়েকজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আমাদের এক দফা দাবিতে অনড়। ভিসি স্যার নামবেন, আমরা অনশন ভাঙব। আমাদের একটাই দাবি ভিসির অপসারণ। এর বাইরে আমরা আর অন্য কিছু ভাবছি না।’

শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পরপরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সেখানে তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

অনশনের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন ছাত্রীরা। এর আগে ১৫ এপ্রিল ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভাঙেন আন্দোলনকারীরা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পাঠক প্রিয়

কুয়েটে শিক্ষার্থীদের অনশন অব্যাহত, ক্যাম্পাসে আবার বিক্ষোভ

Update Time : 01:39:27 pm, Wednesday, 23 April 2025

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের তদন্ত কমিটির ওপর আস্থা রেখে অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসার অনুরোধ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার। তবে উপাচার্যের পদত্যাগ ছাড়া আমরণ অনশন কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা সরে আসবেন না বলে জানিয়েছেন।

আজ বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে শিক্ষা উপদেষ্টা কুয়েট ক্যাম্পাসে আসেন। তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি তাঁদের দাবি শোনেন ও অনশন ভাঙতে অনুরোধ করেন।

বেলা সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সি আর আবরার। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। গতকাল অনশনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে এই গরমের মধ্যে। আমি তাদের জন্য ভীষণভাবে শঙ্কিত। গতকাল আমরা তিনজনের একটা কমিটি করেছি। তাঁরা এসে সার্বিক পর্যবেক্ষণ করে আমাদের একটা সুপারিশ দেবেন। এরপর আমরা পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করব। তাঁরা চাইছেন, আমরা এখনই কোনো ঘোষণা দিই, যার মাধ্যমে তাঁরা অনশন শেষ করতে পারেন। আমি তাঁদের বোঝাতে চেষ্টা করছি যে আইনি বিষয়ে আছে। আমরা যা–ই করি না কেন, সেটা আইন দ্বারা নির্দিষ্ট হতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার নির্দিষ্ট আইন আছে। সেই আইনের মধ্য থেকেই আমাদের কমিটি সুপারিশ করবে বলে আশা করছি। সুপারিশ আমাদের হাতে এলে আমরা চেষ্টা করব যত দ্রুত সেটা কার্যকর করা যায়।’

সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙার পর যে পরিণাম হয়েছিল, সেই উদাহরণ তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে সি আর আবরার বলেন, ‘তাঁরা কেউ কেউ বলেছেন এবং সংগত কারণেই বলেছেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় যখন শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙা হলো, তখন পরবর্তীকালে তো তাঁদের কিছু করা হলো না। আমি বলেছি, উনি (অধ্যাপক জাফর ইকবাল) যেটা করেছিলেন, কেন করেছেন জানি না। সেখানে একজন বুদ্ধিজীবী হিসেবে যার ওপর অনেকে আস্থা রেখেছিলেন, হয়তো তিনি কথা রাখবেন, সেটা তিনি করেননি। সেটা তাঁর বিষয়। এটা নিয়ে আমার আসলে কিছু বলার নেই। এখানে আমি নিজে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে তোমাদের কাছে এসেছি। আমি তোমাদের বলতে পারি, কমিটির যে সুপারিশ আসবে, সেটা আমরা বিবেচনা করে যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটা অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করব।’

এ বিষয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের কয়েকজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আমাদের এক দফা দাবিতে অনড়। ভিসি স্যার নামবেন, আমরা অনশন ভাঙব। আমাদের একটাই দাবি ভিসির অপসারণ। এর বাইরে আমরা আর অন্য কিছু ভাবছি না।’

শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পরপরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সেখানে তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

অনশনের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন ছাত্রীরা। এর আগে ১৫ এপ্রিল ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভাঙেন আন্দোলনকারীরা।