যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা ভেস্তে দিয়ে গাজায় শক্তিশালী হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী, যাতে অন্তত ৪০৪ জন নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন ৫৬২ জন।
হাসপাতাল সূত্রের বরাতে প্রাণহানির সংখ্যা জানিয়ে আলজাজিরা লিখেছে, মঙ্গলবার ভোরে এ প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়, যাতে হামাস নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলে ভাষ্য ইসরায়েলের। যদিও নিহতদের বেশিরভাগই নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
ইসরায়েলি দৈনিক মারিভ জানিয়েছে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সাক্ষ্য স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার ওই সাক্ষ্য নেওয়ার কথা থাকলেও উদ্ভূত ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে’ তা স্থগিতের অনুরোধ জানান নেতানিয়াহু। পরে তা আমলে নিয়ে সাক্ষ্য স্থগিত করে আদালত।
বিবিসি লিখেছে, গাজার উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও হামাসের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কর্মকর্তা মাহমুদ আবু ওয়াফাহ ওই হামলায় নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর আলোচনায় এক সপ্তাহ ধরে অচলাবস্থার পর ইসরায়েল ফের হামলা শুরু করল।
রয়টার্স লিখেছে, গাজার উত্তরাঞ্চল, গাজা সিটি এবং মধ্য ও দক্ষিণ গাজার দেইর আল-বালাহ, খান ইউনিস ও রাফাহসহ একাধিক স্থানে হামলার খবর পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রোজার মাস হওয়ার কারণে অনেকেই যখন সেহেরির খাবার খাচ্ছিলেন, তখন গাজায় বিস্ফোরণ শুরু হয়। ওই সময় অন্তত ২০টি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানকে তারা উড়তে দেখেছেন।
হামলার পর গাজার বাসিন্দারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন। কেউ কেউ হাসপাতালে ছোটাছুটি করছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বিবৃতি অনুযায়ী, দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ওই হামলার নির্দেশ দেন।
“আমাদের জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসের বারবার অস্বীকৃতি জানানোর পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকফ এবং মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে পাওয়া সব প্রস্তাব হামাসের প্রত্যাখ্যানের পর এ হামলা চালানো হয়।”
বিবৃতিতে বলা হয়, এখন থেকে ইসরাইল সামরিক শক্তি বাড়িয়ে হামাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। সপ্তাহান্তে হামলার পরিকল্পনা উপস্থাপন করে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী, যাতে সায় দেন রাজনৈতিক নেতৃত্ব।