ঢাকা 3:33 pm, Wednesday, 18 June 2025

বিশ্বের ২৫টি দেশে ৬শ’ মেট্রিক টন আম রপ্তানি, লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার মেট্রিক টন

  • Reporter Name
  • Update Time : 03:28:04 pm, Wednesday, 18 June 2025
  • 1 Time View

মৌসুমের শুরুতেই বিশ্বের ২৫টি দেশে ৬শ’ মেট্রিক টন আম রপ্তানি রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ। আগামী তিন মাসে অন্তত ৪ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানির ব্যাপারে আশা করছেন আম রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তাগণ। যা গত আমের মৌসুমে রপ্তানির হারের চেয়ে দ্বিগুণ হবে।

জানা যায়, গত মে মাসের ১৮ তারিখ থেকে অনানুষ্ঠানিক আম রপ্তানি শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে আম রপ্তানি শুরু হয় গত ২৮ মে। এদিন চীনের বাজারে ৩ মেট্রিক টন আম রপ্তানির মাধ্যমে রপ্তানি শুরু হয়।

গ্রীষ্মকালীন সুস্বাদু ফল আমের বাম্পার উৎপাদনেও এবার রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে দেশ। চলতি মৌসুমে প্রায় ২ লাখ ৫ হাজার ৩৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৭ লাখ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

জানা যায়, যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, সৌদি আরব, জার্মানি, সুইডেনসহ প্রতি বছর অন্তত ৩৮টি দেশে বাংলাদেশের আম রপ্তানি হয়ে থাকে। এবারই প্রথম চীনে আম রপ্তানি হলো।

আম রপ্তানি প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পে’র প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বাসস’কে বলেন, গত ১৫/১৬ দিনে প্রায় ৬শ’ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়েছে। গোপালভোগ, হিমসাগর ও ল্যাংড়া আম এ সময় রপ্তানি হয়। তিনি বলেন, আমের মৌসুমের আরও অন্তত আড়াই মাস রয়েছে, এরমধ্যে ৪ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানি হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আম রপ্তানি হয় ইংল্যান্ডে।

আম রপ্তানির বিষয়ে এর মান ঠিক রাখার জন্য রপ্তানিকারকদের ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজ এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্ভদ সংগনিরোধ কেন্দ্র। এ প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানই আম রপ্তানি করতে পারবে না। এ ব্যাপারে আরিফুর রহমান বলেন, সরকারের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজের সার্টিফিকেশন গুরুত্বপূর্ণ, রপ্তানির জন্য প্রস্তুতকৃত আমে যাতে কোন রোগ-বালাই, পোকামাকড় না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়। বিদেশের বাজারে যাতে মান সম্মত আম রপ্তানি করা যায় সেদিকে খেয়াল রাখা হয়।

তিনি জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ১৫০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা আম রপ্তানির সঙ্গে জড়িত। এবার প্রতি কেজি আম রপ্তানি হচ্ছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ ডলারে। এক্ষেত্রে বিমানের ভাড়া বাবদ ৩ থেকে ৪ ডলার লেগে যায়। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার মাধ্যমে আম রপ্তানি করে থাকে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সব ঠিক থাকলে এবার আম রপ্তানি দেশের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।

এদিকে বিগত ৮ বছরে আম রপ্তানির হিসাবে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে আম রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৩০৯ মেট্রিক টন, পাঁচ বছর পর ২০২১-২২ অর্থ বছরে আম রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১৭৫৭ মেট্রিক টন। আর ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আরও বৃদ্ধি পেয়ে আম রপ্তানি হয় ৩১ মেট্রিক টন। কিন্তু ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আম রপ্তানি কমে যায়, রপ্তানি হয় প্রায় ১৪ শ’ মেট্রিক টন আম।

গত ৫ মে থেকে সাতক্ষীরার গোপালভোগ আমের মাধ্যমে দেশে আমের ফলন শুরু হয়। এখন আম উৎপাদনের ভরা মৌসুম চলছে। বর্তমানে আম উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। বাংলাদেশের সুস্বাদু আম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে।
তথ্যসূত্র:বাসস

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পাঠক প্রিয়

ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ চাইলেন ট্রাম্প

বিশ্বের ২৫টি দেশে ৬শ’ মেট্রিক টন আম রপ্তানি, লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার মেট্রিক টন

Update Time : 03:28:04 pm, Wednesday, 18 June 2025

মৌসুমের শুরুতেই বিশ্বের ২৫টি দেশে ৬শ’ মেট্রিক টন আম রপ্তানি রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ। আগামী তিন মাসে অন্তত ৪ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানির ব্যাপারে আশা করছেন আম রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তাগণ। যা গত আমের মৌসুমে রপ্তানির হারের চেয়ে দ্বিগুণ হবে।

জানা যায়, গত মে মাসের ১৮ তারিখ থেকে অনানুষ্ঠানিক আম রপ্তানি শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে আম রপ্তানি শুরু হয় গত ২৮ মে। এদিন চীনের বাজারে ৩ মেট্রিক টন আম রপ্তানির মাধ্যমে রপ্তানি শুরু হয়।

গ্রীষ্মকালীন সুস্বাদু ফল আমের বাম্পার উৎপাদনেও এবার রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে দেশ। চলতি মৌসুমে প্রায় ২ লাখ ৫ হাজার ৩৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৭ লাখ মেট্রিক টন আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

জানা যায়, যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, সৌদি আরব, জার্মানি, সুইডেনসহ প্রতি বছর অন্তত ৩৮টি দেশে বাংলাদেশের আম রপ্তানি হয়ে থাকে। এবারই প্রথম চীনে আম রপ্তানি হলো।

আম রপ্তানি প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পে’র প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বাসস’কে বলেন, গত ১৫/১৬ দিনে প্রায় ৬শ’ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়েছে। গোপালভোগ, হিমসাগর ও ল্যাংড়া আম এ সময় রপ্তানি হয়। তিনি বলেন, আমের মৌসুমের আরও অন্তত আড়াই মাস রয়েছে, এরমধ্যে ৪ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানি হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আম রপ্তানি হয় ইংল্যান্ডে।

আম রপ্তানির বিষয়ে এর মান ঠিক রাখার জন্য রপ্তানিকারকদের ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজ এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্ভদ সংগনিরোধ কেন্দ্র। এ প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেট ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানই আম রপ্তানি করতে পারবে না। এ ব্যাপারে আরিফুর রহমান বলেন, সরকারের কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজের সার্টিফিকেশন গুরুত্বপূর্ণ, রপ্তানির জন্য প্রস্তুতকৃত আমে যাতে কোন রোগ-বালাই, পোকামাকড় না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়। বিদেশের বাজারে যাতে মান সম্মত আম রপ্তানি করা যায় সেদিকে খেয়াল রাখা হয়।

তিনি জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ১৫০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা আম রপ্তানির সঙ্গে জড়িত। এবার প্রতি কেজি আম রপ্তানি হচ্ছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ ডলারে। এক্ষেত্রে বিমানের ভাড়া বাবদ ৩ থেকে ৪ ডলার লেগে যায়। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার মাধ্যমে আম রপ্তানি করে থাকে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সব ঠিক থাকলে এবার আম রপ্তানি দেশের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।

এদিকে বিগত ৮ বছরে আম রপ্তানির হিসাবে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে আম রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ৩০৯ মেট্রিক টন, পাঁচ বছর পর ২০২১-২২ অর্থ বছরে আম রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১৭৫৭ মেট্রিক টন। আর ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আরও বৃদ্ধি পেয়ে আম রপ্তানি হয় ৩১ মেট্রিক টন। কিন্তু ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে আম রপ্তানি কমে যায়, রপ্তানি হয় প্রায় ১৪ শ’ মেট্রিক টন আম।

গত ৫ মে থেকে সাতক্ষীরার গোপালভোগ আমের মাধ্যমে দেশে আমের ফলন শুরু হয়। এখন আম উৎপাদনের ভরা মৌসুম চলছে। বর্তমানে আম উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। বাংলাদেশের সুস্বাদু আম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে।
তথ্যসূত্র:বাসস