রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আজ শুক্রবার সকালেও ঘন কুয়াশা ছিল। তারপর ধীরে ধীরে সেই কুয়াশা কমে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে শীতের প্রকোপ শুরু হয়েছে। আজ তাপমাত্রা আরও কমেছে। আজ দেশের দুই জেলায় বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। দুটি জেলাই উত্তরবঙ্গের। শীতের তীব্রতা উত্তরের জনপদেই বেশি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামীকাল শনিবার তাপমাত্রা মোটামুটি আজকের মতোই থাকতে পারে। তবে আগামী রোববার থেকে তা আরও কমবে। এমন অবস্থা থাকতে পারে মঙ্গলবার পর্যন্ত। তারপর অবশ্য তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বার্তায় বলা হয়েছে, আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে, ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল এই বাঘাবাড়িতেই, ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ এক দিনের ব্যবধানে প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গত বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে, ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেখা যাচ্ছে, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ধারবাহিকভাবে কমে আসছে।
এই অবস্থা কয় দিন চলতে পারে—এমন প্রশ্নে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা আজ বলেন, আগামীকাল দেশের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে এর পরদিন থেকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। এ অবস্থা চলতে পারে মঙ্গলবার পর্যন্ত। তবে এরপর তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে।
আজ দেশের যে দুই জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে, সেগুলো হলো সিরাজগঞ্জ ও পঞ্চগড়। আজ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
যদি কোনো এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়, তবে সেই এলাকায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে বলে ধরা হয়। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৪ দশমিক ১ থেকে ৬ ডিগ্রি হলে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। আর অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ তখনই হয়, যখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকে।
আজ মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এ দফায় কী তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কোনো সম্ভাবনা আছে? শাহনাজ সুলতানা বলছিলেন, সেই সম্ভাবনা কম। চলতি মাসে একবারই মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। শীতের তীব্রতা এখন পর্যন্ত অপেক্ষাকৃত কম। গত ডিসেম্বর মাসেও তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল।
এ দফায় যে শীত পড়তে শুরু করে, তা কী এ মৌসুমের শীতের শেষ স্পর্শ? এর উত্তরে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, দেখা গেছে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেও অনেক সময় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে একবার শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা ২ দশমিক ৮–এর মতো ছিল। তাই নিশ্চিত করে বলা যায় না এবারই শীতের স্পর্শ শেষ।
আজ দেশের অন্যান্য স্থানের মতো রাজধানীতেও কমেছে তাপমাত্রা। আজ নগরীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল তা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সূত্র: প্রথম আলো