ঢাকা 5:54 am, Friday, 2 May 2025

রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৬০ টাকা

  • Reporter Name
  • Update Time : 02:24:49 pm, Monday, 21 April 2025
  • 7 Time View

দিনাজপুরের হিলিতে সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৬০। সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা। তবে হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।

ক্রেতারা বলছেন, হিলি স্থলবন্দর হওয়ায় বিভিন্ন নিত্যপণ্য আমদানি হয়। ফলে দেশের অন্যান্য বাজার থেকে এখানে নিত্যপণ্যের দাম কম থাকে। কিন্তু সরবরাহ কমের অজুহাতে গত সপ্তাহ থেকে চলতি সপ্তাহে রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৬০ টাকা পর্যন্ত। অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়েছে। এতে অনেকে কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক মাস ধরে দেশি রসুন দিয়ে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো হচ্ছিল। সরবরাহ বেশি থাকায় দামও কম ছিল। এখন সরবরাহ কম, এজন্য দাম বেড়েছে। সামনে আরও দাম বাড়তে পারে।

রবিবার হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে রসুনের কেজি প্রকারভেদে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এখন একই রসুন প্রকারভেদে ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ছোট আকারেরগুলো ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়ায় কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন ক্রেতারা।

রসুন কিনতে আসা মৌসুমি আক্তার বলেন, ‘পুরো রমজানে রসুন কিনলাম ৮০ টাকায়। এমনকি গত সপ্তাহেও ৮০-৯০ টাকায় কিনলাম। সপ্তাহের ব্যবধানে এমন কী হয়ে গেলো বাজারে, ১৪০-১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তবে ছোট আকারেরগুলো ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবু কোনোভাবেই কেজিতে ৬০ টাকা বাড়ার কারণ দেখছি না। এটি ব্যবসায়ীদের কারসাজি। মজুত করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা।’

তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেলো। পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। কিন্তু আমাদের তো আয়-রোজগার বাড়েনি। আগের মতোই আছে। এতো দাম দিয়ে কীভাবে পণ্য কিনবো আমরা।’

বাজার করতে আসা নাজমুল হোসেন বলেন, ‘গত সপ্তাহে রসুন কিনেছিলাম ৮০ টাকায়। এখন ১৪০-১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এভাবে হঠাৎ দাম বাড়লে আমাদের বিপাকে পড়তে হয়। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। বাধ্য হয়ে কেনার পরিমাণ কমাতে হয়েছে। আগে যেখানে এক কেজি কিনতাম এখন আধা কেজি কিনছি। এ ছাড়া তো কোনও উপায় নেই। আমাদের যেমন আয় সেই মোতাবেক তো চলতে হয়।’

হিলি বাজারের রসুন বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, ‘এ অঞ্চলে রসুন চাষ হয় না। ফলে নাটোর থেকে আনতে হয়। বেশ কিছুদিন ধরে দাম ক্রেতাদের নাগালেই ছিল। এর কারণ হলো দেশি রসুনের সরবরাহ বেশি ছিল। কৃষকরা ক্ষেত থেকে তুলে কাঁচা রসুন কম দামে বিক্রি করেছেন। এখন বেশিরভাগ কৃষকের রসুন তোলা শেষ পর্যায়ে। এখন যেগুলো বাজারে উঠছে এর অধিকাংশই শুকনো। ফলে কৃষকরাও আগের চেয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করছেন। আবার অনেক কৃষক কাঁচা বিক্রি না করে সংরক্ষণ করে রেখেছেন। সেগুলো এখন বেশি দামে বিক্রি করছেন। সেইসঙ্গে মোকামগুলোর অনেক ব্যবসায়ী মজুত করে রাখছেন। এতে সরবরাহ আগের তুলনায় অনেকটা কমে গেছে। আগে যেখানে প্রতি মণ তিন হাজার থেকে তিন হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা বিক্রি হচ্ছে পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকায়। বাড়তি দামে কিনতে হওয়ায় আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। এজন্য বাজারে প্রভাব পড়েছে।’

বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর দিনাজপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত হাট-বাজারের দোকানগুলোতে অভিযান চালানো হয়। দোকানিরা কত দামে কিনে কত দামে বিক্রি করছেন, তার মূল্য তালিকা টাঙিয়েছেন কিনা সেটি মনিটরিং করা হয়। কেউ কোনও কারণ ছাড়া পণ্যের দাম বাড়ালে অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানা করা হয়। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ঢাকায় তিন দিনব্যাপী মোটর শো শুরু

রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৬০ টাকা

Update Time : 02:24:49 pm, Monday, 21 April 2025

দিনাজপুরের হিলিতে সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৬০। সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা। তবে হঠাৎ দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।

ক্রেতারা বলছেন, হিলি স্থলবন্দর হওয়ায় বিভিন্ন নিত্যপণ্য আমদানি হয়। ফলে দেশের অন্যান্য বাজার থেকে এখানে নিত্যপণ্যের দাম কম থাকে। কিন্তু সরবরাহ কমের অজুহাতে গত সপ্তাহ থেকে চলতি সপ্তাহে রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৬০ টাকা পর্যন্ত। অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়েছে। এতে অনেকে কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক মাস ধরে দেশি রসুন দিয়ে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো হচ্ছিল। সরবরাহ বেশি থাকায় দামও কম ছিল। এখন সরবরাহ কম, এজন্য দাম বেড়েছে। সামনে আরও দাম বাড়তে পারে।

রবিবার হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে রসুনের কেজি প্রকারভেদে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এখন একই রসুন প্রকারভেদে ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ছোট আকারেরগুলো ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়ায় কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন ক্রেতারা।

রসুন কিনতে আসা মৌসুমি আক্তার বলেন, ‘পুরো রমজানে রসুন কিনলাম ৮০ টাকায়। এমনকি গত সপ্তাহেও ৮০-৯০ টাকায় কিনলাম। সপ্তাহের ব্যবধানে এমন কী হয়ে গেলো বাজারে, ১৪০-১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তবে ছোট আকারেরগুলো ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবু কোনোভাবেই কেজিতে ৬০ টাকা বাড়ার কারণ দেখছি না। এটি ব্যবসায়ীদের কারসাজি। মজুত করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা।’

তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেলো। পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। কিন্তু আমাদের তো আয়-রোজগার বাড়েনি। আগের মতোই আছে। এতো দাম দিয়ে কীভাবে পণ্য কিনবো আমরা।’

বাজার করতে আসা নাজমুল হোসেন বলেন, ‘গত সপ্তাহে রসুন কিনেছিলাম ৮০ টাকায়। এখন ১৪০-১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এভাবে হঠাৎ দাম বাড়লে আমাদের বিপাকে পড়তে হয়। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। বাধ্য হয়ে কেনার পরিমাণ কমাতে হয়েছে। আগে যেখানে এক কেজি কিনতাম এখন আধা কেজি কিনছি। এ ছাড়া তো কোনও উপায় নেই। আমাদের যেমন আয় সেই মোতাবেক তো চলতে হয়।’

হিলি বাজারের রসুন বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, ‘এ অঞ্চলে রসুন চাষ হয় না। ফলে নাটোর থেকে আনতে হয়। বেশ কিছুদিন ধরে দাম ক্রেতাদের নাগালেই ছিল। এর কারণ হলো দেশি রসুনের সরবরাহ বেশি ছিল। কৃষকরা ক্ষেত থেকে তুলে কাঁচা রসুন কম দামে বিক্রি করেছেন। এখন বেশিরভাগ কৃষকের রসুন তোলা শেষ পর্যায়ে। এখন যেগুলো বাজারে উঠছে এর অধিকাংশই শুকনো। ফলে কৃষকরাও আগের চেয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করছেন। আবার অনেক কৃষক কাঁচা বিক্রি না করে সংরক্ষণ করে রেখেছেন। সেগুলো এখন বেশি দামে বিক্রি করছেন। সেইসঙ্গে মোকামগুলোর অনেক ব্যবসায়ী মজুত করে রাখছেন। এতে সরবরাহ আগের তুলনায় অনেকটা কমে গেছে। আগে যেখানে প্রতি মণ তিন হাজার থেকে তিন হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা বিক্রি হচ্ছে পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকায়। বাড়তি দামে কিনতে হওয়ায় আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। এজন্য বাজারে প্রভাব পড়েছে।’

বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর দিনাজপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত হাট-বাজারের দোকানগুলোতে অভিযান চালানো হয়। দোকানিরা কত দামে কিনে কত দামে বিক্রি করছেন, তার মূল্য তালিকা টাঙিয়েছেন কিনা সেটি মনিটরিং করা হয়। কেউ কোনও কারণ ছাড়া পণ্যের দাম বাড়ালে অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানা করা হয়। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।’