ঢাকা 9:14 am, Tuesday, 17 June 2025

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘হিজাব র‍্যালি’

  • Reporter Name
  • Update Time : 09:17:19 am, Sunday, 2 February 2025
  • 48 Time View

আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘হিজাব র‍্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে র‍্যালিটি শুরু হয়ে টিএসসি হয়ে রাসেল টাওয়ার ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষে র‍্যালির আয়োজন করে ‘প্রোটেস্ট এগেইনস্ট হিজাবোফোবিয়া ইন ডিইউ’ নামের একটি সংগঠন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা অন্যান্য ক্ষেত্রে পোশাকের স্বাধীনতার কথা বলে থাকি, কিন্তু যখন হিজাবের কথা আসে, তখন স্বাধীনতার সম্মানটা কেউ করে না। তাঁরা বলেন, হিজাব আমাদের অধিকার। আমাদেরকে আমাদের কাজ দিয়ে বিবেচনা করুন, পোশাক দিয়ে নয়।’

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিশকাতুল জান্নাত বলেন, ‘যেকোনো বিষয়ে জানার জন্য আমাদের তার পেছনের ইতিহাস জানা সব থেকে জরুরি। আমরা যেমন দেখেছি, জুলাই অভ্যুত্থানের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার প্রোপাগান্ডার শিকার হয়েছি, ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। তাই আমরা যদি আমাদের ইতিহাস না জানি তাহলে এই হিজাব ডে এটি আস্তে আস্তে হারিয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, বিগত চার বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ বিশ্ব হিজাব দিবস ঘিরে কিছু কিছু ইভেন্ট করেছে। তবে সার্বিকভাবে এটা এখনো বাংলাদেশে পপুলার (জনপ্রিয়) না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী উম্মে ছালমাও এই হিজাব র‍্যালিতে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে অনেক নিকাব–হিজাব পরিহিত আপু থাকলেও পরবর্তীতে আমরা কোনো নিকাব করা নারী নেতৃত্ব দেখতে পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘নিকাব করে নামাজ পড়বে, রোজা রাখবে, সংসার করবে, রান্না করবে এমন ধারণায় বিশ্বাসী আমাদের সমাজ। আমি মনে করি, আমরা হিজাব–নিকাব করেও দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজ যোগ্যতায় দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারি। এজন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। আপনার অধিকার আপনাকেই আদায় করে নিতে হবে।’

র‍্যালিটির অন্যতম আয়োজক স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদ নামে একটি সংগঠনের আহবায়ক জামালুদ্দিন খালেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাঁরা ফ্যাসিবাদের আমলে হিজাব–নিকাব পরিধান করেছেন, তাঁরা বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। শুধু হিজাব–নিকাবই নয়, যাঁরা দাড়ি–টুপি পরতেন, তাঁরাও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। পশ্চিমারা এগুলোকে একধরনের জঙ্গিবাদের চিহ্ন হিসেবে উপস্থাপন করেন। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্যই মূলত আমাদের এই প্রচেষ্টা।’

হিজাব র‍্যালি শেষ হলে রাজু ভাস্কর্যে এক সমাবেশে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। অনলাইন প্রচারণার মাধ্যমে যাঁরা র‍্যালির উপস্থিতি বাড়িয়েছেন, তাদের মধ্য থেকে পাঁচজনকে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। তাছাড়া রোববার সকাল ৯টায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১০০তম ব্যাচের উদ্যোগে হিজাব বিষয়ে সচেতনতার জন্য একটি সেমিনারও আয়োজন করা হবে। সেমিনারটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পাঠক প্রিয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘হিজাব র‍্যালি’

Update Time : 09:17:19 am, Sunday, 2 February 2025

আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘হিজাব র‍্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে র‍্যালিটি শুরু হয়ে টিএসসি হয়ে রাসেল টাওয়ার ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষে র‍্যালির আয়োজন করে ‘প্রোটেস্ট এগেইনস্ট হিজাবোফোবিয়া ইন ডিইউ’ নামের একটি সংগঠন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা অন্যান্য ক্ষেত্রে পোশাকের স্বাধীনতার কথা বলে থাকি, কিন্তু যখন হিজাবের কথা আসে, তখন স্বাধীনতার সম্মানটা কেউ করে না। তাঁরা বলেন, হিজাব আমাদের অধিকার। আমাদেরকে আমাদের কাজ দিয়ে বিবেচনা করুন, পোশাক দিয়ে নয়।’

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিশকাতুল জান্নাত বলেন, ‘যেকোনো বিষয়ে জানার জন্য আমাদের তার পেছনের ইতিহাস জানা সব থেকে জরুরি। আমরা যেমন দেখেছি, জুলাই অভ্যুত্থানের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার প্রোপাগান্ডার শিকার হয়েছি, ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। তাই আমরা যদি আমাদের ইতিহাস না জানি তাহলে এই হিজাব ডে এটি আস্তে আস্তে হারিয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, বিগত চার বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ বিশ্ব হিজাব দিবস ঘিরে কিছু কিছু ইভেন্ট করেছে। তবে সার্বিকভাবে এটা এখনো বাংলাদেশে পপুলার (জনপ্রিয়) না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী উম্মে ছালমাও এই হিজাব র‍্যালিতে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে অনেক নিকাব–হিজাব পরিহিত আপু থাকলেও পরবর্তীতে আমরা কোনো নিকাব করা নারী নেতৃত্ব দেখতে পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘নিকাব করে নামাজ পড়বে, রোজা রাখবে, সংসার করবে, রান্না করবে এমন ধারণায় বিশ্বাসী আমাদের সমাজ। আমি মনে করি, আমরা হিজাব–নিকাব করেও দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজ যোগ্যতায় দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারি। এজন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। আপনার অধিকার আপনাকেই আদায় করে নিতে হবে।’

র‍্যালিটির অন্যতম আয়োজক স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদ নামে একটি সংগঠনের আহবায়ক জামালুদ্দিন খালেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাঁরা ফ্যাসিবাদের আমলে হিজাব–নিকাব পরিধান করেছেন, তাঁরা বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। শুধু হিজাব–নিকাবই নয়, যাঁরা দাড়ি–টুপি পরতেন, তাঁরাও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। পশ্চিমারা এগুলোকে একধরনের জঙ্গিবাদের চিহ্ন হিসেবে উপস্থাপন করেন। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্যই মূলত আমাদের এই প্রচেষ্টা।’

হিজাব র‍্যালি শেষ হলে রাজু ভাস্কর্যে এক সমাবেশে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। অনলাইন প্রচারণার মাধ্যমে যাঁরা র‍্যালির উপস্থিতি বাড়িয়েছেন, তাদের মধ্য থেকে পাঁচজনকে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। তাছাড়া রোববার সকাল ৯টায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১০০তম ব্যাচের উদ্যোগে হিজাব বিষয়ে সচেতনতার জন্য একটি সেমিনারও আয়োজন করা হবে। সেমিনারটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।