ভূমিকম্প পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত মায়ানমারে ত্রাণ, জরুরি চিকিৎসামগ্রী ও মানবিক সহায়তা নিয়ে ত্যাগ করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী জাহাজ ‘সমুদ্র অভিযান’। প্রায় ১২০ টন ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা নিয়ে আজ জাহাজটি অধিনায়ক ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আরিফ হোসেন এর নেতৃত্বে মায়ানমারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
এ সময় নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান ত্রাণসামগ্রী প্রেরণে গৃহীত কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং মায়ানমার গমনকারী নৌসদস্যদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী মায়ানমারে এই ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে।
ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ৭৭ টন শুকনা খাবার, ০৯ টনেরও অধিক তাবু, ব্যবহারযোগ্য বস্ত্রাদি, ২৯ টন বিশুদ্ধ খাবার পানি, ০৪ টন হাইজিন কিট এবং প্রায় ০১ টন প্রয়োজনীয় ঔষধ সামগ্রী। এই অত্যাবশ্যকীয় ত্রাণ সামগ্রীসমূহ মায়ানমারের ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বরপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে সহায়ক হবে। জাহাজটির আগামী ১১ এপ্রিল ২০২৫ মায়ানমারের ইয়াঙ্গুন বন্দরে পৌঁছাবে বলে আশা করা যায়। দেশটিতে পৌঁছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মায়ানমার সরকারের প্রতিনিধি দলের নিকট এ সকল ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তর করা হবে।
গত ২৮ মার্চ মায়ানমার ও থাইল্যান্ডে ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পে মায়ানমারে এ পর্যন্ত ৩,৫০০ এর অধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে ৫,০০০ জনেরও অধিক। ধ্বংস হয়েছে হাসপাতাল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য আবাসিক ভবন। খাদ্য, পানি ও বাসস্থান সংকট এবং জরুরি চিকিৎসার অভাবে মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। এ মানবিক বিপর্যয়ে মায়ানমারের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে দুই ধাপে ৩১.৫ টন ত্রাণ সামগ্রী, বিশেষ উদ্ধার এবং চিকিৎসা সহায়তাকারী দল প্রেরণ করেছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে বিপর্যস্ত মায়ানমারের জনগণকে সহায়তার উদ্দেশে জাহাজযোগে ত্রাণ সামগ্রী প্রেরণ করেছিল।