ঢাকা 5:20 pm, Thursday, 19 June 2025
শিরোনাম
ডিবির হারুনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাহাঙ্গীরের প্লট ক্রোকের আদেশ নতুন আরো তিন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে ব্রি যশোরে করোনায় ২ জনের মৃত্যু র‌্যাব পরিচয়ে কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক ৫ হলি আর্টিজান হামলা : মৃত্যুদণ্ড থেকে সাত আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডের যুক্তি পূর্ণাঙ্গ রায়ে শেখ হাসিনার আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ গুমের শিকার ব্যক্তিদের সম্ভাব্য ৪ ধরনের পরিণতি হয়েছে : গুম কমিশন সভাপতি পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করতে এসএসএফ সদস্যদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান লিবিয়া থেকে ১৫৮ বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে হাসিনা-আসাদুজ্জামানকে আত্মসমর্পণে ট্রাইব্যুনালের নোটিশ

বিক্ষোভকারীদের হত্যা, লাশ গুম করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাসিনা: জাতিসংঘের প্রতিবেদন

  • Reporter Name
  • Update Time : 10:08:13 pm, Wednesday, 12 February 2025
  • 28 Time View

জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাচকালে বিক্ষোভকারীদের হত্যা ও তাদের লাশ গুম করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন পতিত স্বৈরাচার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ‘হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন্স অ্যান্ড অ্যাবিউজেস রিলেটেড টু দ্য প্রটেস্টস অব জুলাই অ্যান্ড আগস্ট ২০২৪ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, গণঅভ্যুত্থানের সময় গত ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে ‘কোর কমিটির’ একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মন্ত্রী বিজিবি কমান্ডারকে আরো সহজে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

“জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যাচ্ছে, পর দিন অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই  নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার নির্দেশ দেন এবং বিশেষভাবে বলেন, বিক্ষোভের নেতাদের, দাঙ্গাবাজদের ধরুন, হত্যা করুন এবং তাদের লাশ গুম করুন।”

আন্দোলনের সময় মাঠপর্যায়ে এসব নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়। ফলে ১৮ আগস্টের পরে পাওয়া নিহতের সংখ্যা তিনগুণ হয়ে যায় বলে ওএইচসিএইচআর জেনেছে। ১৮ জুলাই নিহতের সংখ্যা ১০০ জন জানা গেলেও—- পরেরদিন ১৯ জুলাই তা প্রায় ৩০০ জনে পৌঁছায়।

ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদন বলছে, “সংগ্রহ করা তথ্যউপাত্ত স্বাধীনভাবে পর্যালোচনার ভিত্তিতে ওএইচসিএইচআর জানতে পেরেছে যে, সাবেক সরকারের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো, আওয়ামী লীগের সহিংস গোষ্ঠীগুলো— পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিল, যার মধ্যে রয়েছে শত শত বিচার-বহির্ভুত হত্যা এবং অন্যান্যভাবে হিংস্র শক্তি প্রয়োগের ঘটনা– যার ফলে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী গুরুতর আহত, গ্রেপ্তার, নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ব্যবহারের শিকার হন।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ধরনের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্বেগ তৈরি করে, সুতরাং এগুলোর আরও তদন্ত হওয়া দরকার, যাতে করে এতে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও নির্যাতনের ঘটনা (আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের সংজ্ঞায়) কতোটা ঘটেছে- সেটির মাত্রা নির্ধারণ করা যায়। একইসঙ্গে বাংলাদেশের নিজস্ব আইনেও গুরুতর এসব অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পাঠক প্রিয়

বিক্ষোভকারীদের হত্যা, লাশ গুম করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাসিনা: জাতিসংঘের প্রতিবেদন

Update Time : 10:08:13 pm, Wednesday, 12 February 2025

জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাচকালে বিক্ষোভকারীদের হত্যা ও তাদের লাশ গুম করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন পতিত স্বৈরাচার ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের (ওএইচসিএইচআর) ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ‘হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন্স অ্যান্ড অ্যাবিউজেস রিলেটেড টু দ্য প্রটেস্টস অব জুলাই অ্যান্ড আগস্ট ২০২৪ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, গণঅভ্যুত্থানের সময় গত ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে ‘কোর কমিটির’ একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মন্ত্রী বিজিবি কমান্ডারকে আরো সহজে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

“জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যাচ্ছে, পর দিন অনুষ্ঠিত একটি বৈঠকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই  নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিক্ষোভকারীদের হত্যা করার নির্দেশ দেন এবং বিশেষভাবে বলেন, বিক্ষোভের নেতাদের, দাঙ্গাবাজদের ধরুন, হত্যা করুন এবং তাদের লাশ গুম করুন।”

আন্দোলনের সময় মাঠপর্যায়ে এসব নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়। ফলে ১৮ আগস্টের পরে পাওয়া নিহতের সংখ্যা তিনগুণ হয়ে যায় বলে ওএইচসিএইচআর জেনেছে। ১৮ জুলাই নিহতের সংখ্যা ১০০ জন জানা গেলেও—- পরেরদিন ১৯ জুলাই তা প্রায় ৩০০ জনে পৌঁছায়।

ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদন বলছে, “সংগ্রহ করা তথ্যউপাত্ত স্বাধীনভাবে পর্যালোচনার ভিত্তিতে ওএইচসিএইচআর জানতে পেরেছে যে, সাবেক সরকারের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো, আওয়ামী লীগের সহিংস গোষ্ঠীগুলো— পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিল, যার মধ্যে রয়েছে শত শত বিচার-বহির্ভুত হত্যা এবং অন্যান্যভাবে হিংস্র শক্তি প্রয়োগের ঘটনা– যার ফলে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী গুরুতর আহত, গ্রেপ্তার, নির্যাতনসহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ব্যবহারের শিকার হন।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ধরনের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্বেগ তৈরি করে, সুতরাং এগুলোর আরও তদন্ত হওয়া দরকার, যাতে করে এতে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও নির্যাতনের ঘটনা (আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের সংজ্ঞায়) কতোটা ঘটেছে- সেটির মাত্রা নির্ধারণ করা যায়। একইসঙ্গে বাংলাদেশের নিজস্ব আইনেও গুরুতর এসব অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।