গণঅধিকার পরিষদের অঙ্গ সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সহ-সম্পাদক রবিউল আউয়াল অন্তরের নিখোঁজের ঘটনায় পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের জড়িয়ে মামলার ঘটনায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে বসবাসরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিবার বেশ উদ্বিগ্ন ও অনিরাপদ বোধ করছেন বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃৃপক্ষ।
অন্তরের নিখোঁজের ঘটনা এবং তার অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হওয়ার পর এ বিষয় আজ আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হলরুমে গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে লিখিত বক্তব্য রাখেন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শহিদ উল্লাহ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, নানা রকম হুমকি, মামলা- মোকদ্দমা ও ভিত্তিহীন অভিযোগের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে বসবাসরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিবার বেশ উদ্বিগ্ন ও অনিরাপদ বোধ করছে। একই সাথে চাইনিজ কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মরতদের নিরাপত্তা নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন রয়েছেন। চাইনিজ কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট-২ এর মেন্টেনেন্স এর কার্যক্রম এবং চলমান ফেইজ-২ এর কার্যক্রম বিলম্ব হওয়ার আশঙ্কার বিষয়টি পত্র মারফত জানিয়েছেন।
শহীদ উল্লাহ ভূঁইয়া আরও বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য তিনি অনুরোধ জানান। এছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করবে বলে আশা করেন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে এবং দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে সকল সংস্থা এবং সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে কথা বলেন বিদ্যুৎ প্লান্ট এর ম্যানেজার শাহ আব্দুল মাওলা। সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন, ‘রবিউল আউয়াল অন্তরের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি রহস্যজনক। এটি এখন পুলিশের তদন্তাধীন একটি বিষয়। পুলিশ বিষয়টি স্পষ্ট করবেন।’
এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ রাত আনুমানিক ১০:৪৫ মিনিটে কলাপাড়া মহিলা কলেজ রোডের নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গ্রাফিক্স ওয়ার্ল্ড বন্ধ করে বাসায় যাওয়ার পথে কলাপাড়া পটুয়াখালী মহাসড়কের রজপাড়া মাদ্রাসা সংলগ্ন সড়কে নিখোঁজের প্রায় ৫৪ ঘণ্টা পর ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকার আশ্রাফাবাদ নবীনগর এলাকার একটি বসত ঘর থেকে রবিউল আউয়াল অন্তরকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে আশ্রয়দাতা মো. আনাছ আহমেদ প্রান্ত (২৬), মো. আসাদ (২২) পুলিশকে জানান, অন্তরের পারিবারিক সমস্যা এবং তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আন্দোলন সফল হলে তিনি চলে যাবেন এ মর্মে আশ্রয় গ্রহণ করেন। তবে উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদে অন্তর পুলিশকে জানায়, তাকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা সাদা মাইক্রোবাসযোগে মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। তাৎক্ষণিক তারা মাইক্রোবাস থেকে নেমে জোরপূর্বক তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে মাওয়া-ভাঙ্গা সড়কের পাশে নিয়ে ফেলে দেয়। সেখান থেকে পরিবার বা তার রাজনৈতিক দলের সাথে যোগাযোগ অথবা আইনের আশ্রয় না নিয়েই তিনি নিজে বাসযোগে ঢাকায় তার বন্ধু মো. আল আমিনের কাছে চলে যান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ প্লান্টের ম্যানেজার শাহ আব্দুল মাওলা, নির্বাহী প্রকৌশলী মিথুন মাহালি, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তারিক নূর, নিরাপত্তা ম্যানেজার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট মুসা মতিউর রহমান, বাংলাদেশ চায়না টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল আ. ছালাম, সহকারী ব্যবস্থাপক (ইনভেস্টিগেশন) মো. শাহ মনি জিকো প্রমুখ।